স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় “প্রজ্ঞাপন” ব্যতিত করোনা রোগী টেস্টে পজিটিভ হলেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সুযোগ নেই?

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস টেস্ট সরকারিভাবে করা হয়। রোগী টেস্ট করার পর যদি পজিটিভ ধরা পড়ে তখন সরকারের প্রশাসন/সরকারি স্থানীয় প্রশাসন সরকারি এম্বুলেন্স, ডাক্তার, নার্স, প্রশাসনের লোকজন, পুলিশ সদস্য প্রেরণ করে রোগীকে সরকারি করোনা ভাইরাস বিষয় নিদিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায় ও বাড়ীর লোকজনসহ লকডাউন করে রাখে। তাহলে কিভাবে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে সম্ভব?

টেস্ট রিপোর্ট যদি পজিটিভ পাওয়া যায় সে রির্পোটের আলোকে রোগী ভর্তি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান করে তারপর টেস্ট করে নেগেটিভ পাওয়া গেলে তবেই বলা যাবে হোমিওপ্যাথি করোনা ভাইরাস চিকিৎসা সফলতা। তার আগে সরকার ও মিডিয়া এবং জনগণ বিশ্বাস করবেনা।
এজন্য প্রয়োজন ভারত সরকার এর আয়ুশ মন্ত্রণালয় এর করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান বিষয়ক প্রজ্ঞাপন জারির মত বাংলাদেশ সরকার এর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা অনুমোদন এর প্রজ্ঞাপন জারি করা দরকার। তারপর বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদান করা।
বিশ্বব্যাপি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহামারীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিশাল সাফল্য প্রমাণ দেখিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান করতে হলে নিজ নিজ দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইনগত কাঠামোর মধ্যে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান করে সাফল্য দেখাতে পারবে। এজন্য রাষ্ট্র গুলোর সরকার ও সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবশ্যই আগ্রহ থাকতে হবে এবং আইনি বাঁধা দূর করতে হবে। তা না করলে মাঠ প্রশাসনে হোমিওপ্যাথ ডাক্তারদেরকে আইনি ঝামেলা ও মিডিয়া ঝামেলায় প্রতিনিয়ত পড়তে হতে পারে।

★বর্তমান আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২টি ভাগে বিভক্ত। যথা- (১) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, (২) স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ।

১। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগঃ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারী ও বেসরকারি হাসপাতাল বা প্রাইভেট ডাক্তার চেম্বারের চিকিৎসক (এ্যালোপ্যাথি/ডেন্টাল, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি, আয়ুর্বেদিক), ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও অন্যান্য।

২। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগঃ
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ (এ্যালোপ্যাথি/ডেন্টাল, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি, আয়ুর্বেদিক) ও অন্যান্য।

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান করতে হলে অবশ্যই হোমিওপ্যাথি ঔষধ ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদানের বিষয়ে সুপষ্ট লেখা উল্লেখ সহ নিম্নের ৩টি ধাপ অনুসরণ করতে হবেঃ-

(১) বাংলাদেশ সরকার এর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর “স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ” হতে স্মারক নং ও তারিখ সহ প্রজ্ঞাপন বা পত্র জারি করতে হবে।
(২) তারপর তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যাবে। তারপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এর প্রজ্ঞাপন/পত্রের স্মারক নং ও তারিখ এর আলোকে সূত্র ও স্মারক নং উল্লেখ করে পত্র বোর্ডকে দিবে।
(৩) তারপর হোমিওপ্যাথি বোর্ড স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত পত্রের আলোকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও অধিদপ্তর এর স্মারক নং ও তারিখ উল্লেখ করে পত্র জারি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে প্রেরণ করা।

★বাংলাদেশে সরকারী-বেসরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ভাইরাস রোগী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় লাগবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর “প্রজ্ঞাপন” ।

করোনা ভাইরাস রোগী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেডে রেখে পর্যবেক্ষণ ও হোমিওপ্যাথি হাসপাতালের বেডে রেখে লক্ষণ ভিত্তিক হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়োগ এবং হোমিওপ্যাথিক হাসপাতালের বেডে রেখে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর নয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর “স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ” বা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এর অধীনে “স্বাস্থ্য অধিদপ্তর” কর্তৃক জারিকৃত স্মারক নং পত্র বা “প্রজ্ঞাপন” থাকতে হবে।
বর্তমান আইন অনুযায়ী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল/হাসপাতাল গুলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর “স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ” এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এর “স্বাস্থ্য অধিদপ্তর” এর অধিনে পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর “স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ” ও “স্বাস্থ্য অধিদপ্তর” হতে “করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান” এর পত্র বা “প্রজ্ঞাপন” জারি করতে পারলে, শুধুমাত্র তারপর করোনা ভাইরাস রোগীদের বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং প্রস্তাবিত হোমিওপ্যাথি বিশ্ববিদ্যালয় কিছু সংখ্যক করোনা ভাইরাস রোগী সরাসরি ভর্তি ও সরাসরি হাসপাতালের বেডে রেখে হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়োগ ও চিকিৎসা দিন। রোগীদের নিয়মিত সরকারীভাবে অাপডেট পরীক্ষা করার ব্যবস্থা, হোমিওপ্যাথি রোগী লিপি তৈরি/কেস টেকিং, রোগীর লক্ষণ ভিত্তিতে হোমিওপ্যাথি ঔষধের নাম, প্রতিদিনের রোগী পর্যবেক্ষনের লক্ষণ, কখন কোন হোমিওপ্যাথি ঔষধ, কত শক্তিকৃত, মাত্রা/প্রয়োগ বিধি, রোগী পর্যবেক্ষণের তথ্য/আরোগ্যকর তথ্য বা রেকড সংরক্ষণ করা। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত করা ও সংরক্ষণ করা। বাংলাদেশ সরকার ও জাতিকে অবগত করা।

তার কোন কিছু না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার, সংবাদপত্র/মিডিয়াতে প্রচার আইনগত বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যত্য কতটুকু?
করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আইনগত বৈধতা-গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে বাংলাদেশ?

প্রথম ধাপ অর্জন :
———————–
বাংলাদেশের ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু) কর্তৃক জনস্বার্থে ৩১ জানুয়ারি’২০২০খ্রি. ও ৯ মার্চ ২০২০খ্রি. এবং ২০ মার্চ ২০২০খ্রি. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারত সরকার এর আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের করোনা ভাইরাস বিষয় সহ নথি/তথ্য সহ অন্যান্য বিষয় উল্লেখ করে লিখলে দেশব্যাপি জনমত গড়ে উঠলে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড এ সংক্রান্ত ২৩ মার্চ ২০২০খ্রি. হোমিওপ্যাথিক সরকারী “অফিস আদেশ” জারি করেছে। বাংলাদেশে জাতীয় সংবাদপত্রে ২৪ মার্চ ২০২০খ্রি. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৫ মার্চ ২০২০খ্রি. দৈনিক যুগান্তর ও বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং ২৬ মার্চ ২০২০খ্রি. দৈনিক জনকণ্ঠ এ সংক্রান্ত হোমিওপ্যাথিক সরকারী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করেছে। করোনা ভাইরাস হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদেরকে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এর অধিনস্থ বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড অনুমোদন প্রদান করেছে।
জনস্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু) কর্তৃক অনেক গুলোর মধ্যে লিখিত ও প্রকাশিত কয়েকটি লিংক :

২০ মার্চ’২০২০খ্রি.
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2640725646252217&id=100009444212262

০৯ মার্চ’২০২০খ্রি.
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2630422933949155&id=100009444212262

৩১ জানুয়ারী’২০২০খ্রি.
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2596343957357053&id=100009444212262

দ্বিতীয় ধাপ অতিক্রম করা :
————————————
বাংলাদেশে ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু) কর্তৃক ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক লেখায় করোনা ভাইরাস হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদানে সরকার সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর “স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ” ও “স্বাস্থ্য অধিদপ্তর” হতে “প্রজ্ঞাপন” জারি না করলে দেশে মাঠ প্রশাসনে করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথ ডাক্তারদেরকে আইনি ঝামেলা ও মিডিয়া ঝামেলায় প্রতিনিয়ত পড়তে হতে পারে এবং করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব নয়। আইনি সমস্যা হতে রক্ষা পেতে আইনের ফাঁকফোকড় ও ভারত এবং বাংলাদেশের নথি/ডকুমেন্টস সহ বিস্তারিত তুলে ধরা এবং সমাধানের পথ তুলে ধরা হয়েছে।

সর্বশেষ ০২ মে’২০২০খ্রি. ও ১৩ এপ্রিল’২০২০খ্রি. ১২ এপ্রিল’২০২০খ্রি. জনস্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু) কর্তৃক লিখিত ও প্রকাশিত লেখার শিরোনাম এবং লিংক (ভিজিট ও কপি করতে পারেন) :

০২ মে’২০২০খ্রি.
শিরোনাম : “করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আইনগত বৈধতা-গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে ভারত ও বাংলাদেশ?” https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2680509878940460&id=100009444212262

১৩ এপ্রিল’২০২০খ্রি.
শিরোনাম : “করোনা মহামারি প্রতিরোধে হোমিওপ্যাথিক জাতীয় কমিটি” ও “জাতীয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বোর্ড” হোমিওপ্যাথি বোর্ড কর্তৃক গঠন ও অনুমোদন গ্রহণযোগ্যতা?
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2662748237383291&id=100009444212262

১২ এপ্রিল’২০২০খ্রি.
শিরোনাম : হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ভাইরাস রোগী চিকিৎসায় লাগবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর প্রজ্ঞাপন।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2661865114138270&id=100009444212262

এগিয়ে যাক বাংলাদেশ ও সঠিকভাবে আইনি কাঠোমোতে এগিয়ে যাক হোমিওপ্যাথি। জয় বাংলা।

(তথ্যসূত্র : ভারত ও বাংলাদেশের নথি/ডকুমেন্টস, ওয়েবসাইট, আইন, আন্তর্জাতিক আইন ও গাইড লাইন এবং অন্যান্য)
(মতামত)

লেখক পরিচিতি :
ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু)
ডিএইচএমএস (রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল), এমএসএস (এশিয়া ইউনিভার্সিটি)
বগুড়া, বাংলাদেশ।
(চিকিৎসক, শিক্ষক, কলামিস্ট ও প্রাক্তন সাংবাদিক)