ঠাণ্ডা-সর্দির সমস্যায় হাঁচি বড় বেদনাদায়ক। তবে দেহের জন্য জরুরি হলেই হাঁচি আসে। নানা অ্যালার্জির কারণেও হাঁচি একটা সাধারণ বিষয়। আমাদের সবারই হাঁচি হয়। এটা এমন এক রিফ্লেক্স যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। হাঁচি সম্পর্কে ৯টি অজানা তথ্য আপনাদের জানানো হলো।
১. আপনার হাঁচি ঘণ্টায় ১০০ মাইল বেগে বের হয়। তবে অনেকে আছেন যারা বহু কাঠখড় পুড়িয়ে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হাঁচি ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৩৫ মাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন।
২. হাঁচির মাধ্যমে বের হওয়া জীবাণু বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। হালকা-পাতলা হাঁচিতে জীবাণু চারদিকের ৫ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত ছড়াতে পারে। আর জোরেসোরে বের হওয়া হাঁচি তো ৩০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত এলাকা দূষিত করে দেয়।
৩. সূর্যের আলোতেও অনেকের হাঁচি আসে। পাখির পাখনা, মরিচের গুড়ো, ঠাণ্ডা এবং সর্দিজনিত অ্যালার্জি হাঁচির কারণ। কিন্তু অদ্ভুত হলেও সত্য যে, প্রতি চারজনের একজন সূর্যের আলোর কারণে হাঁচি দেন। ফোটিক স্নিজ রিফ্লেক্স এক ধরনের প্রতিক্রিয়া যার ফলে সূর্যের আলোতে হাঁচি আসে। তবে বিজ্ঞানী পুরোপুরি পরিষ্কার নন যে, সূর্যের আলো কেনো হাঁচির কারণ। তবে ধারণা করা হয়, উজ্জ্বল সূর্যের আলো নাসারন্ধ্রে সংকোচনের সৃষ্টি করে যার মাধ্যমে মস্তিষ্কে হাঁচির নির্দেশ চলে যায়।
৫. পরপর দুই বা তিনবার হাঁচি হওয়াটা স্বাভাবিক
নাসারন্ধ্রের মধ্যে সুড়সুড়ি বা চুলকানি বা সংবেদনশীনতার কারণে যে হাঁচি হয়, তা নাসারন্ধ্রের অলি-গলিতে ঘুরপাক খেয়ে ঠিকভাবে বের হয়ে আসতে পারে না। তখন একাধারে আরো এক বা দুইবার প্রয়োজন পড়ে হাঁচি দেওয়ার।
৬. হাঁচির সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে আপনার দুই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। প্রচণ্ড বেগে হাঁচি বের হওয়ার সময় মানুষের পক্ষে চোখ খুলে রাখা সম্ভব হয় না। এটাকে বলে ইনভলেন্টারি রিফ্লেক্স। একই ধরনের রিফ্লেক্স হয় ডাক্তার যখন হাতুড়ি দিয়ে হাঁটুতে আস্তে আস্তে বাড়ি দিয়ে পরীক্ষা করেন।
৭. হাঁচির সময় চোখ বন্ধ হয়ে যায়, প্রচণ্ড দমকে বায়ু বের হয়ে আসে, কিন্তু হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বন্ধ হয় না। সুস্থ্য স্বাভাবিক অবস্থায় হৃদযন্ত্র কোনো কারণে বন্ধ হয় না বা হঠাৎ একটি স্পন্দন মিস করে না। তা ছাড়া হাঁচির আগে মানুষ বড় আকারের শ্বাস টেনে নেয়। ফলে হাঁচির মুহূর্তে ভাগুস নার্ভের সংকোচন-প্রসারণ বোঝা যায় না। তাই এ সময় মানুষ হৃদযন্ত্রে তেমন কিছু অনুভব করে না।
৮. কিছু সময় হঠাৎ করে হাঁচি চলে আসে। আবার কিছু সময় এমন বোধ হয় যে হাঁচি আসবে। এমন কিছু পরিবেশ রয়েছে যেখানে শব্দ করে হাঁচি দেওয়াটা অস্বস্তিকর হতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে আমরা নাক ধরে হাঁচিটিকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। এটা খুবই বাজে একটি কাজ। এতে চোখের রক্তের ধারকগুলো ফেটে যেতে পারে, মস্তিষ্কের রক্তের ধারকগুলো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং কানে শোনার জন্য যে ড্রাম রয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৯. কিছু পদ্ধতি রয়েছে যা ব্যবহার করে হাঁচি হতে পারে এমন বোধ হওয়ার সময় তা সামাল দেওয়া যেতে পারে। এ সময় নাক ডলাডলি করতে পারেন, ওপরের ঠোঁটটি নীচের ঠোঁট দিয়ে নীচের দিকে টেনে ধরে বড় করে নিঃশ্বাস বের করে দিন। এতে হাঁচিটিকে দমন করা যায়।
সূত্র : হাফিংটন পোস্ট