হাঁপানি এড়াতে যা করবেন

web-655721
যেসব জিনিস থেকে আক্রমণ শুরু হয় সেগুলো থেকে দূরে থাকাই হাঁপানি বা অ্যাজমা প্রতিরোধের ভালো উপায়। তাই যাদের হাঁপানি আছে তাদের অ্যালার্জি পরীক্ষা করে জানা দরকার কোন কোন দ্রব্যাদি থেকে অ্যালার্জি শুরু হয়। নিচের বিষয়গুলো লক্ষ রাখুন।

* আক্রান্ত অনেকেরই পশুপাখির লোমে অ্যালার্জি থাকে। হাঁপানি থাকলে এ ধরনের প্রাণী বাড়িতে না রাখাই ভালো।

* বিছানার চাদর লিলেন কাপড়ের হওয়া ভালো। প্রতিদিন দুবেলা ঘরের মেঝে পরিষ্কার করতে হবে। রোগীর বিছানার চাদর প্রতিদিন ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে অথবা প্রতিদিন রোদে শুকাতে হবে। যেসব জিনিস থেকে ধুলা ওড়ে সেগুলো নাড়াচাড়া করবেন না। এসব ঝাড়ার সময় রোগীকে ঘরের বাইরে থাকতে হবে।

* কোনো ঝাঁজালো গন্ধ যেমন মসলা ভাজার গন্ধ, মশা মারার স্প্রে আর পারফিউম থেকে দূরে থাকা ভালো।images

* ধুলা, ধোঁয়া, ঠাণ্ডা বা কুয়াশা থেকে দূরে থাকতে হবে। রাস্তার ধুলা, ঘরের পুরনো ধুলা, গাড়ির ধোঁয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ফিল্টার মাস্ক ব্যবহার করুন। যাঁরা বাইক অথবা নন-এসি গাড়ি চালান তাঁরা অবশ্যই মাস্ক পরে নেবেন।

* সিগারেটের ধোঁয়া হাঁপানির কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। শুধু হাঁপানিই নয়, ফুসফুস ও শ্বাসনালিসংক্রান্ত অনেক অসুখের অন্যতম কারণ ধূমপান। সিগারেটের ধোঁয়া থেকে প্রথমে ব্রঙ্কাইটিস, পরে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস হয়।379744_463677720390941_606490931_n

* ঘরে কার্পেট রাখবেন না। এগুলোতে প্রচুর ধুলা জমে। নরম চেয়ার, কুশন ও বাড়তি বালিশও ঘরে রাখার দরকার নেই। এগুলোতেও ধুলা জমে। তোশকে পাতলা র‌্যাক্সিনের কাভার দিন।

* রান্নাঘরের ধোঁয়া বেরিয়ে যাওয়ার জন্য জানালা খুলে রাখুন। আবার যখন বাইরে ধোঁয়া, দূষিত ধুলা বা ফুলের রেণু বেশি থাকে, তখন জানালা বন্ধ রাখুন।

* প্রতিদিন নিয়ম করে হালকা ব্যায়াম করা খুব জরুরি। হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো এগুলো হাঁপানি রোগীদের পক্ষে ভালো ব্যায়াম। হাঁটার সময় সামনে ঝুঁকে হাঁটবেন না। শিরদাঁড়া সোজা রেখে প্রতিদিন দু-তিন কিলোমিটার উন্মুক্ত বাতাসে সমতলে হাঁটুন। এর সঙ্গে প্রাণায়াম-জাতীয় গভীর শ্বাস নেওয়ার আসন করতে পারেন। হাঁপানি আক্রান্ত বাচ্চাদের ব্যায়াম ও খেলাধুলার সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কি না। হলে খেলার আগেই ওষুধ দিতে হবে।

* কোনো কারণে ভয় পেলে, মানসিক উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা শোকসংবাদ পেলেও হাঁপানির টান হতে পারে।

* হাঁপানি রোগীর অনুপস্থিতিতে পোকামাকড়ের জন্য স্প্রে করুন, কড়া গন্ধযুক্ত রান্নাবান্না সেরে রাখুন। এরপর কিছুক্ষণ ঘরের জানালা খুলে রাখুন।

* হাঁপানি চিকিৎসা চলাকালে রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে দিন। কারণ শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে হাঁপানির ওষুধ কাজ করে না। এ ছাড়া কফ জমে যায় ও সহজে বেরোতে পারে না। ফলে শ্বাসকষ্ট আরো বেড়ে যায়।

* বেশি রাতে ভরপেট খেলে টান উঠতে পারে। তাই রাতে পেটভরে ভুলেও খাবেন না। হাঁপানি রুখতে নিয়ম করে হাতে কিছুটা সময় নিয়ে খেতে হবে, অকারণে তাড়াহুড়ো করা চলবে না। ঝাল মসলাদার খাবারের বদলে হালকা মসলাযুক্ত খাবার ভালো। ফ্রিজ থেকে বের করে সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা জিনিস খাওয়া উচিত নয়।

* শীতকালে ঘর উষ্ণ রাখতে পারলে ভালো হয়। গরমের সময় এসির হাওয়াটা যেন সোজাসুজি গায়ে এসে না লাগে, এটাও দেখা প্রয়োজন।

হাঁপানির বিপদসংকেতগুলোর কোনো একটিও শুরু হলেই ডাক্তারের সাহায্য নিন। বিপদসংকেতগুলো হচ্ছে-

* ওষুধ যদি বেশিক্ষণ কাজ না করে বা একেবারেই উপকার না হয়

* শ্বাস-প্রশ্বাস যদি দ্রুত ও জোরে জোরে হয়

* কথা বলতে কষ্ট হয়

* ঠোঁট বা আঙুলের নখ নীল বা ছাই রঙের হয়ে যায়

* পাঁজড়ের চারপাশে ও ঘাড়ের কাছের চামড়া শ্বাস নেওয়ার সময় ভেতরের দিকে টেনে ধরে

* হঠাৎ স্পন্দন বা নাড়ির গতি অত্যন্ত দ্রুত হয়, হাঁটাচলা করতে কষ্ট হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *