হেপাটাইটিস-সি প্রতিকারে হোমিওপ্যাথি

hepatitis c_shomporke_shocheton_honহেপাটাইটিস-সি লিভারের একটি মারাত্মক রোগ যা হেপাটাইটিস-সি নামক ভাইরাসের কারণে হয়। এটি লিভার কোষ ধ্বংস করে, লিভারে প্রদাহের সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তী সময়ে লিভার সিরোসিস বা ক্যান্সারে পরিণত হয়। এই রোগ হেপাটাইটিস-বি’র চেয়েও মারাত্মক; কারণ হেপাটাইটিস-সি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ৫-১০ বছর পর্যন্ত কোনো লক্ষণই প্রকাশ পায় না। ফলে রোগী বুঝতেই পারে না যে, তার এই রোগ হয়েছে।

এই অবস্থায় ভাইরাস নীরবে লিভারের কোষ ধ্বংস অব্যাহত রাখে ও লিভার সিরোসিস বা ক্যান্সার সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী রোগের শেষ পর্যায়ে লিভার সিরোসিস বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বেলায়ই বুঝতে পারে যে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসই তার রোগের মূল কারণ।

শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস-সি রোগটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) হিসাব মতে, বিশ্বের প্রায় ১৭ কোটি মানুষ হেপাটাইটিস-সি’তে আক্রান্ত। প্রতি বছর প্রায় ৩০-৪০ লাখ মানুষ এ রোগের শিকার হচ্ছেন। বর্তমান বিশ্বে হেপাটাইটিস-সি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার চারগুণ। ভারতে প্রায় ৩ কোটি, পাকিস্তানে ১ কোটি ১০ লাখ লোক এ রোগে আক্রান্ত। জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে শতকরা ৩ ভাগ লোক হেপাটাইটিস-সি’তে আক্রান্ত ভাইরাসের বাহক। সুতরাং এই হিসাব মতে এ দেশে হেপাটাইটিস-সি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার ৪০ লাখ।

এ সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাপক প্রচারের ফলে হেপাটাইটিস-বি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলেও ঘাতক ব্যাধি হেপাটাইটিস-সি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অজ্ঞাতার ফলে অনেকেই এ রোগের শিকার হচ্ছেন।

হেপাটাইটিস-সি কীভাবে ছড়ায় :-
প্রথমত, রক্ত পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। এ জন্য অন্যের রক্ত নেয়ার আগে অবশ্যই হেপাটাইটিস-সি’র পরীক্ষা করানো উচিত। দ্বিতীয়ত, একই সেভিং রেজার, ক্ষুর, ব্লেড, একই ইনজেকশনের সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তির ব্যবহারের মাধ্যমেও এ রোগ ছড়ায়। এ কারণে একজনের জিনিস অন্য কারও ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে যৌনমিলনের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম এবং মা থেকে গর্ভের সন্তানেরও হেপাটাইটিস-সি সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ ছাড়া সামাজিক মেলামেশায় (হ্যান্ডশেক, কোলাকুলি) বা রোগীর ব্যবহার্য দ্রব্যাদি যেমন গ্লাস, চামচ, জামা-কাপড় ইত্যাদির মাধ্যমেও এই রোগ ছড়ায় না। শুধু যেসব দ্রব্য রোগীর রক্তের সংস্পর্শে আসে (ক্ষুর, ব্লেড, রেজর, টুথব্রাশ) সেগুলোর মাধ্যমেই এই রোগ ছড়াতে পারে।

আক্রান্ত রোগীর করণীয়:-
হেপাটাইটিস-সি আক্রান্ত রোগীকে অতিসত্বর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে হেপাটাইটিস-সি থেকে এখন আরোগ্য লাভ সম্ভব। এই চিকিৎসার উদ্দেশ্য হচ্ছে, লিভার কোষ ধ্বংসের গতি বন্ধ এবং শরীরকে ভাইরাসমুক্ত করা। হেপাটাইটস-সি’তে রোগীর জীবনমানের মারাত্মক অবনতি ঘটে ও পরবর্তী সময়ে লিভার সিরোসিস বা ক্যান্সার হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটে।

রোগ নির্ণয় :-
রোগ নির্ণয়ে বিলম্ব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লিভারের কার্যক্ষমতারও অবনতি ঘটতে থাকে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভের সম্ভাবনাও কমে যায়। এ জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা খুবই জরুরি। প্রাথমিক ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তকরণের জন্য রক্তে অহঃর-ঐঈঠ-এর উপস্থিতি নির্ণয় করতে হয়। রোগী যদি প্রাথমিক পরীক্ষায় হেপাটাইটিস-সি পজেটিভ হন, তবে সংক্রমণের পর্যায়ও লিভারের অবস্থা নির্ণয়ের জন্য ঐঈঠ-জঘঅ টেস্ট ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে লিভার বায়োপসির প্রয়োজন হয়।

হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান :-
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় হেপাটাইটিস-সি রোগে ওষুধ নির্বাচন করা খুব সহজ নয়। এ রোগে লক্ষণভেদে নিম্নলিখিত ওষুধ ব্যবহৃত হয়। যথা মার্কুরিয়াম সলিউবিলিস, নেট্রামসালফ, হাইড্রাসটিস, চেলিডোনিয়াম, কার্ডুয়াস-মেরিনাস, চিয়োন্যান্থাস-ভার্জিনিকা, চায়না, লাইকোপোডিয়াম, নাক্সভমিকা, আয়োডিয়াম, লরোসিরেসাস, এসিড মিউর, ফসফরাস, ম্যাগ্নেসিয়া মিউর, কোলেস্টেরিনাম, কলি-সিস্টাইটিস, স্টেলারিয়া মেডিকা, জগল্যান্স সিনেরিয়া, লেপট্যান্ড্রা উল্লেখযোগ্য। তারপরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435 //01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন
Face Book page : ( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *